শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

গুগল এডসেন্স আবেদনের পূর্বে যে ১০ টি কাজ করবেন?

আমরা সবাই জানি, গুগল এডসেন্স থেকে অনেকেই মোটা অংকের টাকা আয় করছে। তবে বর্তমানে গুগলের নিয়ম নীতি আপডেটের পর গুগল এডসেন্স একাউন্ট পাওয়া আরো বেশী কঠিন হয়ে গেছে। আজকে আমি আলোচনা করবো, সোনার হরিণ গুগুল এডসেন্স প্রোগ্রামে অংশ গ্রহণ জন্য আবেদন করার পূর্বে যে ১০টি বিষয় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখবেন গুগুল কিন্তু বিজনেস করার জন্যই আপনার অপেক্ষা করছে। এডসেন্স টিমও আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে.. ।
গুগুল এডসেন্স একাউন্ট সীল
আবেদেন করার পূর্বে কোন ১০টি বিষয় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখেতে হবে: নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।:
১. প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy):
ব্লগারা সাধারণত যে ভুলটি করে থাকে তা হলো- প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy), নিজেদের আলসামী, প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy)সমন্ধে না জানার কারণে অনেকেই ব্লগে প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy) যোগ করেন না। যার কারণে আপনার ব্লগ এডসেন্স একাউন্ট পাওয়ার যোগ্য হলেও, গুগল সরাসরি রিজেক্ট করে থাকে। অনেক ব্লল্গার Privacy Policy যোগ করতে চরম অনীহা প্রকাশ করে। কিন্তু এটি আহমারী কিছু নয়। খুব সহজেই online privacy policy creator এর মাধ্যমে খুব সহজেই প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy)তৈরি করতে পারে। এটি বানানোর জন্য আপনাকে কোন উকিল বা বিজ্ঞ ব্যক্তির কাছে ধরণা দিতে হবে না। আপনার ব্লগে প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy) থাকা থাকা খারাপ কিছু নয়।প্রাইভেসি পলিসি(Privacy Policy)ব্লগের পাঠকের কাছে বর্ণনা করে যে, তারা আপনার ব্লগে থেকে কি পাবে? তাই যদিও এটি আহমারী কিছু নয়, তবে এডসেন্স একাউন্ট আ্যাপ্রুভাল এর ক্ষেত্রে এর প্রভাব যথেষ্ট।
২. About Page :
গুগল এডসেন্স একাউন্ট পেতে হতে About Page আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। About Page এ আপনি(লেখক) এবং আপনার ব্লগ সর্ম্পকিত বিষয় গুলো তুলে ধরতে হবে। About Page এর সাহায্যে পাঠকরা আপনার সমন্ধে জানতে পারবে এবং আপনার ব্লগটি সবার কাছে আরো বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে।
৩. যোগাযোগ ফরম (Contact Us Page):
আমরা সবাই জানি, সবারই কিছু প্রশ্ন, মতামত আছে। যেমুন – আপনি একটি নতুন সফটওয়্যার সমন্ধে একটি বিশদ আর্টিকেল লিখলেন। কিন্তু পাঠকদের মনে আরো কিছু প্রশ্ন থেকে গেল! এখন বাকী প্রশ্নগুলোর কে উত্তর দেবে। উত্তর গুলো আপনাকেই দিতে হবে! তাই পাঠকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা, প্রশ্নাত্তর, পাঠকদের মতামত ইত্যাদি বিষয় গুলোর সাথে সরাসরি যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে যোগাযোগ ফরম (Contact Us Page)আপনার ব্লগে যোগ করতে হবে।আরেকটি সুস্পষ্ট বিষয় মনে রাখবেন, গুগল এডসেন্স শুধু মাত্র মানি মেকিং মেশিন না, এডসেন্স টিম দেখতে চাই আপনার ব্লগটি পাঠকদের সাহায্য করছে কিনা। এক কথায়, ইউজার ফ্রেন্ডলি কি না?
৪. নাম এবং ইমেল যাচাই( Name, Email Verification):
যোগাযোগ ফরম (Contact Us Page), About Page এ আপনার নাম এবং ইমেল যোগ করুন। যা সহজেই গুগল এডসেন্স টিম Verification করতে পারে। কারণ ইদানিং, স্প্যাম, বট দিয়েও অনেকই গুগল এডসেন্স একাউন্ট এর জন্য আবেদন করে থাকে।
৫. এজ ভেরিফিকেশন (Age Verification):
গুগুল এডসেন্স টিম কখনো টিনএজারদের আবেদন গ্রহণ করে না। আপনার বয়স যদি ১৮ এর নিচে হয় তাহলে অবশ্যই এডসেন্স একাউন্টের আবেদন থেকে বিরত থাকবেন। এজ ভেরিফিকেশন (Age Verification) একটি মজার বিষয়। অনেকেই এই বিষয়টির জন্যই রিজেক্টেড হয়। তাই ভালোমতো খেয়াল করুন, আপনি যে, আবেদনটি করতে যাচ্ছেন তাতে আপনার বয়স ১৮+ হচ্ছে কি না। এক্ষ্রেত্রে ফেক এজ ব্যবহার করতে পারেন। তবে যদি কোন সময় গুগুল আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, বার্থসর্টিফিকেট চাই, তাহলে এর জন্য আমি দায়ী থাকবো ন।
৬. সর্বনিন্ম পোষ্ট:
গুগল এডসেন্স একাউন্ট আবেদনের জন্য, ব্লগে ঠিক কতগুলো পোষ্ট লিখতে হবে তা সুষ্পষ্টভাবে কোথাও উল্লেখ নাই। অনেকেই ৫০০+ পোষ্ট থাকা সত্ত্বেও রিকেক্টড হয়েছেন। আবার ১০+ পোষ্ট লিখেও আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। প্রশ্ন হলো আপনি কতগুলো পোষ্ট লিখবেন? এটি আমার নিজস্ব মতামত:
প্রথমিক ভাবে আবেদনের জন্য ৫০+ পোষ্ট থাকলেই চলবে। কিন্তু একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন, মানসম্মত পোষ্ট, নো কপিপেষ্ট, সবকিছুই ইউনিক হতে হবে। সবসময় ৫০০+ ওয়ার্ড লিখার চেষ্টা করবেন।
৭.  কনটেন্ট টাইপ (Content Type):
গুগল এডসেন্স
কি ধরণের লিখা/পোষ্ট/আর্টিকেল/ আপনার ব্লগে প্রকাশ করছেন, এটি এটি সমন্ধে অবশ্যই সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। ব্লগে এমন কিছু প্রকাশ করুন যা বাস্তবতার সাথে সর্ম্পকিত। পর্ণোগ্রাফিক (Pornographic), নিষিদ্ধ জিনিস পত্র (Illegal Items), ড্রাগ (Drugs)টপিক গুলো থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া অন্য ভাষায়(Non English Blog)রচিত ব্লগ, ৩০০ শব্দের(word)নিচে পোষ্ট প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন।
৮. ব্লগ ডিজাইন:
কোয়ালিটি কনটেন্ট এর পরই যে বিষয়টি আসে তা হলো ব্লগের ডিজাইন। ব্লগের ডিজাইনে অবশ্যই expertise > experience  >  Professionalism তিনটি বিষয়ের ছাপ থাকতে হবে। তার মানে যতটা সম্ভব ব্লগ ডিজাইনটা প্রফেশনাল মানের হতে হবে। কিন্তু ডিজাইন করার সময় অবশ্যই ব্লগ লোডিং টাইম বিবেচনায় রাখবেন।
৯. টপ লেভেল ডোমেন (Top Level Domain):
২০১০ সালের আগেও ব্লগস্পট ব্ল দিয়ে গুগল এডসেন্স একাউন্ট অনুমোদন করো যেত, এখন সেই যুগ শেষ। ব্লগস্পট ব্লগ হলে অবশ্যই আপনার একটি কাষ্টম ডোমেন (Top Level Domain) থাকতে হবে।অন্যথায়, আবেদন করে কোন লাভ নেই।
ক. বর্তমানে সাবডোমেনে এডসেন্স একাউন্ট এপ্রুভ হয়না।
খ. টপ লেভেল ডোমেন (Top Level Domain) ব্যবহার করুন।যেমুন. .com, .net, .org ….
গ. .com.bd  অথবা .in কান্ট্রিকোড সম্মলিত ডোমেন নেম ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
(বি: দ্র: এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এডসেন্স একাউন্ট আবেদন করার পূর্বে আপনার ওয়েবসাইট এর বয়স অবশ্যই ৬ মাস হতে হবে।)
১০. অন্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক (Other Ad Networks):
এডসেন্স একাউন্ট এর জন্য আবেদন এর সময় অন্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক (Other Ad Networks)এর এড ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। Chitika, Clicksor এর মতো বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক (Other Ad Networks)এর এড ব্যবহার করেন তাহলে আবেদন করার সময় তা সরিয়ে ফেলুন।
(যদিও গুগুল এডসেন্স টিম অন্য বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক (Other Ad Networks)এর এড নিয়ে কোন প্রকার ঝমেলা করেনা, কিন্তু আবেদনের সময় আপনার সর্বচ্চো সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন